অনলাইন সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়ে তোলার জন্য : KIST এর ছাত্র ছাত্রীদের জন্য গাইডলাইন
ডিজিটাল ল্যান্ডস্কেপ ক্রমাগত প্রসারিত হচ্ছে, সঠিক দক্ষতা এবং মানসিকতার সাথে ডিগ্রী অর্জন কারীদের জন্য প্রচুর ক্যারিয়ারের সুযোগ দিন দিন বাড়ছে। কুষ্টিয়া ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (KIST) থেকে ডিগ্রী অর্জন করা ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য, প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং উদ্ভাবনী চিন্তা থাকার ফলে, অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি (OTAs), IT ফার্ম, ই-কমার্স এবং ইন্টারনেট মার্কেটিং-এ সমৃদ্ধ ক্যারিয়ার গড়ার অনেক সুযোগ রয়েছে। আমাদের গাইড অনুসরণ করে এই গতিশীল সেক্টরে সফল ক্যারিয়ার গড়তে আপনি কীভাবে আপনার শিক্ষাকে কাজে লাগাতে পারেন তার ডিটেলস বুজতে পারবেন।
1. Online Travel Agency (OTA) Sector - (অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সী)
অনলাইন ট্রাভেল ইন্ডাস্ট্রি মানুষের যাত্রার পরিকল্পনা ও বুক করার পদ্ধতিতে বিপ্লব ঘটিয়েছে। বাই এয়ার টিকিট লিমিটেড (Buy Air Ticket Ltd) এর মতো কোম্পানির উত্থান এমন পেশাদারদের চাহিদা তৈরি করেছে যারা ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা বাড়াতে, এবং ভোক্তাদের আচরণ বোঝার সাথে প্রযুক্তিকে মিশ্রিত করে এই শিল্পে বিপ্লব করছে।
কোন বিষয়ে স্কিল ডেভেলপ করবে:
- ভ্রমণ প্রযুক্তি: Amadeus, galileo বা Sabre এর মতো গ্লোবাল ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম (GDS) এর সাথে নিজেকে পরিচিত করা এবং শিখতে হবে, কিভাবে OTA গুলি এই সিস্টেমগুলিকে একীভূত করে ভ্রমণের প্রব্লেম গুলি সমাধান করে৷
- ডেটা বিশ্লেষণ: ব্যবহারকারীর তথ্য এনালাইসিস করে পূর্বাভাস, ভ্রমণ অফার অপ্টিমাইজ করা এবং কি ভাবে ব্যবহারকারীকে আকৃষ্ট করা যায়, তা শিখতে হবে।
- গ্রাহকের অভিজ্ঞতা ডিজাইন: ইউজার এনগেজিং ইন্টারফেস তৈরি করতে ডিজাইন এর উপর খুব ভাল ধারণা থাকতে হবে যা বুকিং এবং ভ্রমণকে সহজ ও আনন্দদায়ক করে তুলবে।
- ট্রাভেল এজেন্সী ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ:
টিকেটিং : GDS এ ফ্লাইট বুকিং, ইস্যু, রি-ইস্যু, ক্যানসেল, রিফান্ড, ভয়েড শিখে যে কোন ট্রাভেল এজেন্সীতে টিকেটিং অফিসার হিসাবে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ।
রেজারভেশন: টুরিস্ট বিশের বিভিন্ন দেশে সুন্দর প্লেস এ গুরতে যায়, কেউ মেডিক্যাল পারপাস এ যায়, কেউ বিসনেস মিটিং এ যায় তাদের টিকেট সহ হোটেল রুম প্রয়োজন হয়। যে কোন ট্রাভেল এজেন্সী অথবা হোটেল এ রেজারভেশন অফিসার হিসাবে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ থাকে।
ডাটা এনালিস্ট : ওয়ার্ড , এক্সেল এবং ডাটাবেস এর উপর দক্ষতা থাকলে ডাটা এনালিস্ট হিসাবে কাজ করার সুযোগ।
নেটওয়ার্কিং: ফেইসবুক, ইনস্টাগ্রাম , এক্স , লিঙ্কেডিন এর মতো সোশ্যাল মিডিয়া এবং ইমেইল মার্কেটিং ও টেলি-মার্কেটিং এর উপর দক্ষতা থাকলে যে কোন কোম্পানিতে কাস্টমার রিলেশনশিপ এবং নেটওয়ার্কিং অফিসার হিসাবে জব করা যায়।
গ্লোবাল ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম (GDS) এ দক্ষতা অর্জন করতে এবং ট্রাভেল এজেন্সী তে ক্যারিয়ার করতে যোগাযোগ করতে পারেন: মনোজ রয়, 01711788031, ওয়েবসাইট Monoj Roy.
2. Information Technology (IT) Sector - আই টি সেক্টর
আইটি ফার্ম গুলি হল আজকের ডিজিটাল অর্থনীতির মেরুদন্ড, যাদের প্রযুক্তিতে দক্ষতা রয়েছে তাদের জন্য বিভিন্ন ক্যারিয়ারের পথ সুগম করে। একজন KIST হিসাবে, আপনার প্রযুক্তিগত দক্ষতা এই সেক্টরে সাফল্যের জন্য আপনার ধার উন্মোচক হতে পারে।
কি কি বিষয়ে ফোকাস দিতে হবে :
- প্রোগ্রামিং: পাইথন, জাভা, পি.এইচ.পি, C++ এবং সি.এস.এস এর মতো প্রোগ্রামিং ভাষা শিখে জ্ঞানকে শক্তিশালী করে একজন সফটওয়্যার ডেভেলপার হিসাবে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। সফ্টওয়্যার ডেভেলপমেন্ট লাইফসাইকেল মডেল বোঝা, যেমন চতুর, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
- সাইবার নিরাপত্তা: সাইবার-আক্রমণের ক্রমবর্ধমান হুমকি মোকাবেলা , সাইবার নিরাপত্তায় দক্ষতা, আপনাকে আইটি সংস্থাগুলির কাছে একটি অমূল্য সম্পদ করে তুলতে পারে।
- আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং মেশিন লার্নিং: আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) এবং মেশিন লার্নিং (ML) শিখে নিজেকে এগিয়ে রাখুন থাকুন, যা প্রযুক্তিগত ল্যান্ডস্কেপকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাবে।
- অনলাইন মার্কেটিং: যে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রচার ও প্রসার এর জন্য মার্কেটিং এর কলা কৌশল জানা খুবই গুরুত্বপর্ণ। প্রতিষ্ঠানের খরচ কমানোর জন্য ট্রাডিশনাল মার্কেটিং এর চেয়ে অনলাইন মার্কেটিং এর প্রতি মালিকগণ বেশি ফোকাস দিয়ে থাকে। তাই আপনি অনলাইন মার্কেটিং শিখে নিজের ক্যারিয়ার স্ট্রং করে নিতে পারবেন।
- ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ:
- আই টি এক্সপার্ট : আই টি এক্সপার্ট হিসাবে বিভিন্ন কোম্পানিতে আপনি সফ্টওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন ডিজাইনার, ওয়েবসাইট ডিজাইন & ডেভেলপ , আই টি মেইনটেনেন্স, নেটওয়ার্কিং অফিসার হিসাবে ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন।
- সিস্টেম বিশ্লেষক: বিদ্যমান সিস্টেমগুলিকে বিশ্লেষণ করে উন্নত করার জন্য, ব্যবসায়ের চাহিদাগুলি নিশ্চিত করে কাজ করার জন্য সিস্টেম এনালিস্ট হিসাবে কাজ করার সযোগ।
- সাইবারসিকিউরিটি স্পেশালিস্ট: দৃঢ় নিরাপত্তা প্রোটোকল তৈরি এবং প্রয়োগ করে সাইবার হুমকি থেকে সংস্থাগুলিকে রক্ষা জন্য সাইবারসিকিউরিটি স্পেশালিস্ট হিসাবে কাজ করার সুযোগ।
- বিসনেস ডেভেলপমেন্ট: অনলাইন এবং ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং এর কলা কৌশল শিখে আপনি ট্রাভেল এজেন্সী সহ দেশ বিদেশের যে কোন কোম্পানিতে মার্কেটিং ম্যানেজার এবং বিসনেস ডেভেলপমেন্ট অফিসার হিসাবে কাজ করতে পারবেন।
3. E-Commerce Sector - ই-কমার্স ব্যবসা
ই-কমার্স মানে শুধু অনলাইনে পণ্য বিক্রি করা নয়; এটি নিরবচ্ছিন্ন কেনাকাটার অভিজ্ঞতা তৈরি করে যা গ্রাহকদের আনন্দিত করে। প্রযুক্তিগত এবং সৃজনশীল দক্ষতার সঠিক মিশ্রণের সাথে, আপনি এই দ্রুত বর্ধনশীল শিল্পে উন্নতি করতে পারেন।
প্রোডাক্ট সার্চ , কালেকশন এ ভালো ধারণা নিয়ে শপিফাই এবং আমাজন সহ দেশ ও বিদেশের সব নাম করা ই-কমার্স সাইট এ রি-সেলার এবং এফিলিয়েট মার্কেটিং করে ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতি মাসে অনেক ভাল রেভিনিউ জেনারেট করতে পারে। এই ক্ষেত্রে তাদের অনলাইন মার্কেটিং এবং প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন লিখার উপর খুব ভাল এক্সপেরিয়েন্স থাকতে হয়।
বাংলাদেশে কি ভাবে ই-কমার্স ব্যবসা করা যায় ?
বাংলাদেশে ই-কমার্স ব্যবসা করার জন্য একটি সুপরিকল্পিত ও সঠিকভাবে সংগঠিত ব্যবসায়িক কৌশল প্রয়োজন। ই-কমার্স ব্যবসার প্রসার ঘটছে দ্রুতগতিতে, আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সফল হতে পারেন আপনিও। নিচে বাংলাদেশে ই-কমার্স ব্যবসা শুরুর প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
১. ব্যবসার ধারণা ও নীশ নির্বাচন
ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করার প্রথম ধাপ হলো একটি নির্দিষ্ট নীশ বা বাজার নির্বাচন করা। এখানে আপনি কোন ধরণের পণ্য বা সেবা বিক্রি করবেন তা নির্ধারণ করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, ফ্যাশন আইটেম, ইলেকট্রনিক্স, খাদ্যদ্রব্য, স্বাস্থ্যসেবা পণ্য ইত্যাদি হতে পারে আপনার ব্যবসার ক্ষেত্র। নীশ নির্বাচনের সময় বাজারের চাহিদা এবং আপনার আগ্রহকে গুরুত্ব দিতে হবে। এটি আপনাকে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সহায়তা করবে।
২. ব্যবসায়িক পরিকল্পনা তৈরি
একটি সফল ই-কমার্স ব্যবসা পরিচালনার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যবসায়িক পরিকল্পনা তৈরি করা জরুরি। এতে আপনার লক্ষ্য, বাজেট, টার্গেট কাস্টমার, মার্কেটিং কৌশল এবং পরিচালনার ধরণ সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ থাকতে হবে। পরিকল্পনা ছাড়া ব্যবসা শুরু করলে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।
৩. ওয়েবসাইট তৈরি ও ডিজাইন
ই-কমার্স ব্যবসার মূল ভিত্তি হলো একটি পেশাদারী ও ব্যবহারবান্ধব ওয়েবসাইট। ওয়েবসাইটে আপনার পণ্যগুলোর বিস্তারিত তথ্য, ছবি এবং মূল্য সংযুক্ত থাকতে হবে। এছাড়া, ওয়েবসাইটটি মোবাইল ফ্রেন্ডলি ও রেসপন্সিভ হতে হবে যাতে ক্রেতারা সহজেই পণ্য ব্রাউজ ও ক্রয় করতে পারে। ওয়েবসাইট তৈরি করতে আপনি কোনো ওয়েব ডেভেলপার বা ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের (যেমন Shopify, WooCommerce) সাহায্য নিতে পারেন।
৪. ট্রেড লাইসেন্স ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট
বাংলাদেশে বৈধভাবে ই-কমার্স ব্যবসা পরিচালনার জন্য ট্রেড লাইসেন্স প্রয়োজন। এটি পেতে হলে স্থানীয় সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভার সাথে যোগাযোগ করতে হবে। এছাড়া, ব্যবসায়িক লেনদেনের জন্য একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা জরুরি। আপনি আপনার ব্যবসার নামে একটি কর্পোরেট ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন, যা ব্যবসায়িক লেনদেনকে সহজ করবে।
৫. পেমেন্ট গেটওয়ে সেটআপ
ই-কমার্স ব্যবসার জন্য একটি নির্ভরযোগ্য পেমেন্ট গেটওয়ে থাকা অত্যন্ত জরুরি। বাংলাদেশে বিকাশ, নগদ, রকেট, এবং বিভিন্ন ব্যাংক পেমেন্ট গেটওয়ে হিসেবে প্রচলিত। এ গেটওয়েগুলোকে ওয়েবসাইটের সাথে ইন্টিগ্রেট করতে হবে যাতে ক্রেতারা সহজেই পেমেন্ট করতে পারে।
৬. লজিস্টিকস এবং ডেলিভারি সিস্টেম
আপনার ব্যবসার সাফল্য অনেকাংশে নির্ভর করে পণ্যের সঠিক ও সময়মতো ডেলিভারির উপর। এজন্য আপনি একটি ভালো লজিস্টিকস পার্টনার নির্বাচন করতে পারেন। বাংলাদেশে পেপারফ্লাই, পাঠাও, রেডএক্স ইত্যাদি জনপ্রিয় লজিস্টিকস সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়া, নিজের ডেলিভারি সিস্টেমও গড়ে তুলতে পারেন।
৭. মার্কেটিং ও প্রচারণা
ই-কমার্স ব্যবসায় সফল হতে হলে ডিজিটাল মার্কেটিং ও সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং অপরিহার্য। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব, এবং গুগল অ্যাডওয়ার্ডসের মাধ্যমে আপনার পণ্য ও সেবা প্রচার করতে পারেন। এছাড়া, কন্টেন্ট মার্কেটিং, ইমেইল মার্কেটিং এবং ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিংও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
৮. গ্রাহক সেবা ও পুনরায় ক্রয় নিশ্চিত করা
একটি সফল ই-কমার্স ব্যবসার অন্যতম মূল উপাদান হলো ভালো গ্রাহক সেবা। ক্রেতাদের প্রশ্ন ও সমস্যার দ্রুত সমাধান এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সহযোগিতা প্রদান করতে হবে। এছাড়া, পুনরায় ক্রয় নিশ্চিত করতে ক্রেতাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা, ডিসকাউন্ট অফার এবং বিশেষ অফার প্রদান করতে পারেন।
৯. বাজার বিশ্লেষণ ও উন্নয়ন
আপনার ব্যবসার উন্নতির জন্য নিয়মিত বাজার বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। নতুন ট্রেন্ড, ক্রেতাদের পছন্দের পরিবর্তন এবং প্রতিযোগীদের কার্যক্রম সম্পর্কে আপডেট থাকা জরুরি। এছাড়া, ব্যবসার উন্নয়নে নতুন পণ্য বা সেবা যোগ করা এবং ওয়েবসাইটের কার্যকারিতা বাড়ানোর উপর জোর দিতে হবে।
4. কি ভাবে গড়বে "অনলাইন মার্কেটিং কোম্পানি" এবং আনবে সফলতা ?
বাংলাদেশে ইন্টারনেট মার্কেটিং সেক্টরে ব্যবসা শুরু করতে হলে আপনাকে কিছু নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করতে হবে। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং বা স্নাতক কমপ্লিট করার পর আপনি ইন্টারনেট মার্কেটিং কোম্পানি দিয়ে সফল হতে পারেন যদি সঠিক পরিকল্পনা ও কৌশল ব্যবহার করেন। এই আর্টিকেলে আমি ইন্টারনেট মার্কেটিং ব্যবসা শুরু করার প্রক্রিয়া এবং সফল হওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
১. ইন্ডাস্ট্রি এবং মার্কেটিং ট্রেন্ড সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন
ইন্টারনেট মার্কেটিং সেক্টরে প্রবেশ করার আগে ইন্ডাস্ট্রি এবং বর্তমান মার্কেটিং ট্রেন্ড সম্পর্কে গভীর জ্ঞান অর্জন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য আপনাকে ইন্টারনেট মার্কেটিংয়ের বিভিন্ন দিক যেমন, এসইও (SEO), এসইএম (SEM), কন্টেন্ট মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ইমেইল মার্কেটিং এবং পে-পার-ক্লিক (PPC) ইত্যাদি বিষয়ে দক্ষ হতে হবে। বিভিন্ন অনলাইন কোর্স বা ওয়ার্কশপের মাধ্যমে এই জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করা যেতে পারে।
২. একটি নির্দিষ্ট নীশ (Niche) নির্বাচন
ইন্টারনেট মার্কেটিং কোম্পানি শুরু করার আগে আপনাকে একটি নির্দিষ্ট নীশ নির্বাচন করতে হবে। আপনার কোম্পানি কি ধরণের ব্যবসার জন্য মার্কেটিং সেবা প্রদান করবে তা নির্ধারণ করা জরুরি। উদাহরণস্বরূপ, আপনি শুধুমাত্র ই-কমার্স কোম্পানির জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং সেবা দিতে পারেন, অথবা ফ্রিল্যান্সারদের জন্য পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং সেবা প্রদান করতে পারেন। একটি নির্দিষ্ট নীশে ফোকাস করলে আপনি আপনার দক্ষতা ও সেবা উন্নত করতে পারবেন।
৩. ব্যবসায়িক পরিকল্পনা তৈরি
একটি সফল ইন্টারনেট মার্কেটিং কোম্পানি পরিচালনার জন্য একটি সুপরিকল্পিত ব্যবসায়িক পরিকল্পনা তৈরি করা জরুরি। এতে আপনার ব্যবসার লক্ষ্য, লক্ষ্যবস্তু গ্রাহক, প্রতিযোগিতার পর্যালোচনা, মার্কেটিং কৌশল, বাজেট এবং সময়সীমা সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ থাকতে হবে। এটি আপনাকে ব্যবসার সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে সাহায্য করবে।
৪. পেশাদারী ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়া উপস্থিতি
ইন্টারনেট মার্কেটিং কোম্পানির জন্য একটি পেশাদারী ওয়েবসাইট তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওয়েবসাইটে আপনার সেবা, সফল প্রজেক্ট, গ্রাহকদের প্রতিক্রিয়া এবং যোগাযোগের তথ্য প্রদর্শিত থাকতে হবে। এছাড়া, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোতে সক্রিয় উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। ফেসবুক, লিঙ্কডইন, টুইটার, এবং ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলগুলোর মাধ্যমে আপনার কোম্পানির ব্র্যান্ড ইমেজ এবং কাস্টমারদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারবেন।
৫. টিম গঠন
ইন্টারনেট মার্কেটিং ব্যবসায় সফল হতে হলে একটি দক্ষ টিম গঠন করা অপরিহার্য। আপনার টিমে ডিজিটাল মার্কেটার, কন্টেন্ট ক্রিয়েটর, গ্রাফিক ডিজাইনার, এসইও বিশেষজ্ঞ এবং সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার থাকা উচিত। একটি শক্তিশালী টিমের সাহায্যে আপনি গ্রাহকদের উচ্চমানের সেবা প্রদান করতে পারবেন, যা আপনার ব্যবসার সফলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
৬. সেবা মূল্য নির্ধারণ
সেবা মূল্য নির্ধারণ একটি সংবেদনশীল কাজ। শুরুতে আপনি প্রতিযোগিতামূলক মূল্য নির্ধারণ করতে পারেন, যা বাজারের অন্যান্য প্রতিযোগীদের তুলনায় কিছুটা কম হতে পারে। তবে, সময়ের সাথে সাথে আপনার সেবার গুণগতমান উন্নত হলে মূল্য বাড়ানো যেতে পারে।
৭. ক্লায়েন্ট খোঁজা ও সম্পর্ক গঠন
ইন্টারনেট মার্কেটিং ব্যবসায় সফলতার জন্য ক্লায়েন্ট খোঁজা এবং তাদের সাথে দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক গড়ে তোলা খুবই জরুরি। প্রথমে ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম বা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ক্লায়েন্ট সংগ্রহ করতে পারেন। সফল প্রজেক্টগুলোর মাধ্যমে ক্লায়েন্টদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলুন এবং তাদের কাছ থেকে রেফারেল পেতে চেষ্টা করুন।
৮. নিয়মিত আপডেট এবং উন্নয়ন
ইন্টারনেট মার্কেটিং একটি দ্রুত পরিবর্তনশীল সেক্টর, তাই আপনাকে সবসময় নতুন মার্কেটিং কৌশল এবং প্রযুক্তি সম্পর্কে আপডেট থাকতে হবে। নতুন ট্রেন্ড এবং টুল সম্পর্কে শেখা এবং আপনার সেবায় তাদের প্রয়োগ করা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ থেকে সফল হতে হলে আপনাকে পরিকল্পনা, দক্ষতা এবং স্থিরতা থাকতে হবে। সঠিক নীশ নির্বাচন, দক্ষ টিম গঠন, এবং উচ্চমানের গ্রাহক সেবা প্রদানের মাধ্যমে আপনি এই সেক্টরে আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন। সময়ের সাথে সাথে অভিজ্ঞতা এবং ব্যবসায়িক কৌশল উন্নত করলে আপনি এই সেক্টরে একটি সফল কোম্পানি গড়ে তুলতে সক্ষম হবেন।
KIST এর ছাত্র-ছাত্রীদের সফল ক্যারিয়ার গড়ার টিপস:
- নিয়মিত বই পড়া এবং চর্চা করা: অনলাইন সেক্টরটি গতিশীল, নতুন নতুন সরঞ্জাম এবং কৌশল নিয়মিতভাবে উদ্ভব হচ্ছে। অনলাইন কোর্সে নথিভুক্ত করে, ওয়েবিনারে অংশগ্রহণ করে এবং সার্টিফিকেশন অর্জন করে এগিয়ে থাকতে হবে।
- নেটওয়ার্কিং: লিঙ্কেডিন(LinkedIn), এর মতো প্রফেশনাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী পেশাদার নেটওয়ার্ক তৈরি করতে হবে। নীশ ইন্ডাস্ট্রি প্রফেশনাল দের সাথে কানেক্ট থাকলে প্রচুর কাজ পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।
- ফ্রিল্যান্সিং এবং ইন্টার্নশিপ: ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা অমূল্য। আপনার দক্ষতা প্রয়োগ করতে, একটি পোর্টফোলিও তৈরি করতে এবং শিল্প অনুশীলনের অন্তর্দৃষ্টি অর্জন করতে ফ্রিল্যান্সিং প্রকল্প বা ইন্টার্নশিপে নিযুক্ত হন।
- ব্যক্তিগত ব্র্যান্ডিং: একটি শক্তিশালী অনলাইন উপস্থিতি স্থাপন করুন। আপনার দক্ষতা, প্রকল্প এবং কৃতিত্ব প্রদর্শন করতে লিঙ্কেডিন, এক্স , ফেইসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম এর মত প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করুন। একটি ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট বা পোর্টফোলিও আপনার কাজকে হাইলাইট করতে পারে এবং সম্ভাব্য নিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে পারে।
আই টি , ই-কমার্স, অনলাইন মার্কেটিং ও ফ্রিল্যান্সিং এ ক্যারিয়ার গড়া এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এস্টাব্লিশ করতে Be On SERP এর ফাউন্ডার মো নাছির উদ্দিন: +8801734837023 এর সহযোগিতা নিতে পারেন।
উপসংহার
কুষ্টিয়া ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির ডিগ্রী অর্জন কারীরা অনলাইন সেক্টরে সফল হওয়ার জন্য সুসজ্জিত। দক্ষতা বিকাশের উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করে, প্রাসঙ্গিক অভিজ্ঞতা অর্জন করে এবং শিল্পের প্রবণতার সাথে সংযুক্ত থাকার মাধ্যমে, অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি, আইটি ফার্ম, ই-কমার্স এবং ইন্টারনেট মার্কেটিং ইত্যাদি ক্ষেত্রে একটি পরিপূর্ণ ক্যারিয়ার গড়তে পারে। "ডিজিটাল বিশ্ব সুযোগে পূর্ণ" —সেগুলিকে আলিঙ্গন করুন এবং আপনার সাফল্যের পথ তৈরি করুন।